আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। একই সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষকদের কর্মসূচি বন্ধ করে ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আন্দোলনরত শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ সম্ভব নয়। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নির্বাচনের মৌসুম এলেই তারা (বেসরকারি শিক্ষকরা) এমন দাবি তোলেন। বৈশ্বিক যে আর্থিক অবস্থা, তা বিবেচনায় নিলে এত বড় আর্থিক দায় এখন কাঁধে নেওয়া সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়।
‘তবে আমরা দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ নিয়ে দুটি কমিটি করবো। গঠিত দুটি কমিটি দেশের বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোর জাতীয়করণ সম্ভাব্যতা যাচাই করবে। এর মধ্যে একটি কমিটি আর্থিক সম্ভাব্যতা এবং অন্যটি প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা যাচাই করে দেখবে।’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
দীপু মনি আরও বলেন, বিরাট একটি অংশ তো আন্দোলনে নেই। আন্দোলন করছেন ছোট একটি অংশ। যারা আন্দোলনে নেই তারাও তাদের সহকর্মীদের বিষয়টি বুঝিয়ে বলবেন। আসলে যেকোনো আন্দোলন চলমান থাকলে একটা পর্যায়ে সেটি আর মূল আন্দোলনকারীদের হাতে থাকে না। সেখান থেকে নাশকতার আশঙ্কাও থাকে। আজকে যারা আন্দোলনে আছেন, তারা কি আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন? যদি না পারেন, তাহলে বলবো- এমন পরিস্থিতির দিকে বিষয়টিকে নিয়ে যাবেন না, যা খারাপ অবস্থার সৃষ্টি করে। তাই তাদের বলবো- আপনারা ঢাকা থেকে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যান, ক্লাসে ফিরে যান।
ডা. দীপু মনি জানান, বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোতে বড় ধরনের সরকারের বড় ধরনের আর্থিক সংশ্লেষ রয়েছে। সরকার বেসরকারি এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষকদের বেতন, প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যের বই, বৃত্তি, অবকাঠামো উন্নয়ন, ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিভিন্ন ধরনের ল্যাবসহ নানা সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আয় স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের তহবিলে থাকে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, দেশের সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে জাতীয়করণের জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন। পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের জন্য যে বড় আর্থিক সক্ষমতা থাকা দরকার, তা বৈশ্বিক সংকটের এ সময়ে কোনো সরকারই পারবে না। তারপরও আমরা আর্থিক সক্ষমতার বিষয়টি বাদ দিয়ে এটি কতটা বাস্তবসম্মত এবং সহজে করা যায়, তা দেখবো।
এদিকে, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর আন্দোলন কর্মসূচি বন্ধ করা হবে না কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অভ্যন্তরীণ বৈঠকে বসেছেন বাংলাদেশ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) নেতারা। এ বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বিটিএ’র জেলা, মহানগর ও অঞ্চল কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা। বৈঠক শেষে তারা ব্রিফ করবেন।
সূত্রঃ jagonews24.com
0 coment rios: